বিশ্বনবী সাঃ এর মেরাজের শিক্ষা
বিশ্বনবী সাঃ এর মেরাজের শিক্ষা |
মিরাজের শিক্ষা
سُبۡحٰنَ
الَّذِیۡۤ اَسۡرٰی بِعَبۡدِہٖ لَیۡلًا مِّنَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ اِلَی
الۡمَسۡجِدِ الۡاَقۡصَا الَّذِیۡ بٰرَکۡنَا حَوۡلَہٗ لِنُرِیَہٗ مِنۡ اٰیٰتِنَا ؕ
اِنَّہٗ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ
পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে
হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি
তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:১)
حَدَّثَنَا
ابْنُ الْمُصَفَّى، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، وَأَبُو الْمُغِيرَةِ، قَالاَ
حَدَّثَنَا صَفْوَانُ، قَالَ حَدَّثَنِي رَاشِدُ بْنُ سَعْدٍ، وَعَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ جُبَيْرٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَمَّا عُرِجَ بِي مَرَرْتُ بِقَوْمٍ لَهُمْ
أَظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ يَخْمِشُونَ وُجُوهَهُمْ وَصُدُورَهُمْ فَقُلْتُ مَنْ
هَؤُلاَءِ يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ لُحُومَ النَّاسِ
وَيَقَعُونَ فِي أَعْرَاضِهِمْ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ حَدَّثَنَاهُ
يَحْيَى بْنُ عُثْمَانَ عَنْ بَقِيَّةَ لَيْسَ فِيهِ أَنَسٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
মি’রাজের রাতে আমি এমন এক কওমের
পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরী এবং তা দিয়ে তারা অনবরত তাদের মুখমণ্ডলে
ও বুকে আচড় মারছে। আমি বললাম, হে জিবরীল !
এরা কারা? তিনি বললেন, এরা সেসব লোক যারা
মানুষের গোশত খেতো (গীবত করতো) এবং তাদের মানসম্মানে আঘাত হানতো ।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৮৭৮
وَعَنِ
ابنِ مَسعُود رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى
الله عليه وسلم : «لَقِيْتُ إِبْرَاهِيمَ لَيلَةَ أُسْرِيَ بِي، فَقَالَ: يَا
مُحَمّدُ أَقْرِئْْ أُمَّتَكَ مِنِّي السَّلاَمَ، وَأَخْبِرْهُمْ أنَّ الجَنَّةَ
طَيَّبَةُ التُّرْبَةِ، عَذْبَةُ المَاءِ، وَأنَّهَا قِيعَانٌ وَأَنَّ غِرَاسَهَا:
سُبْحَانَ اللهِ، وَالحَمْدُ للهِ، وَلاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ».
رواه الترمذي، وقال: حديث حسن
ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেন, “মি’রাজের রাতে ইব্রাহীম عليه السلام -এর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ঘটে। তিনি বললেন, ‘হে মুহাম্মদ! তুমি তোমার উম্মতকে
আমার সালাম পেশ করবে এবং তাদেরকে বলে দেবে যে, জান্নাতের মাটি পবিত্র ও উৎকৃষ্ট, তার পানি মিষ্ট। আর
তা বৃক্ষহীন একটি সমতল ভূমি। আর ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদু লিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবার’ হল তার রোপিত বৃক্ষ।”
ফুটনোটঃ (তিরমিযী ৩৪৬২) রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৪৪৮
মিরাজের শিক্ষা
১। একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর ইবাদাত করা
وَقَضٰی
رَبُّکَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاہُ وَبِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا ؕ
اِمَّا یَبۡلُغَنَّ عِنۡدَکَ الۡکِبَرَ اَحَدُہُمَاۤ اَوۡ کِلٰہُمَا فَلَا تَقُلۡ
لَّہُمَاۤ اُفٍّ وَّلَا تَنۡہَرۡہُمَا وَقُلۡ لَّہُمَا قَوۡلًا کَرِیۡمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার
কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ
কথা।
(সূরা বানী ইসরাইল ১৭:২৩)
সূরা ইখলাছে একনিষ্ঠতার শিক্ষা
عَنْ
أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَرَأَيْتَ رَجُلًا غَزَا يَلْتَمِسُ
الْأَجْرَ وَالذِّكْرَ، مَالَهُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ: «لَا شَيْءَ لَهُ» فَأَعَادَهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، يَقُولُ لَهُ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا شَيْءَ لَهُ» ثُمَّ قَالَ:
«إِنَّ اللَّهَ لَا يَقْبَلُ مِنَ الْعَمَلِ إِلَّا مَا كَانَ لَهُ خَالِصًا،
وَابْتُغِيَ بِهِ وَجْهُهُ»
আবু উমামা বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ এক ব্যক্তি
রাসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বললেনঃ ঐ ব্যক্তি সম্বন্ধে
আপনি কি বলেন, যে ব্যক্তি সওয়াব এবং সুনামের
জন্য জিহাদ করে, তার জন্য কি রয়েছে? রাসুলূল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার জন্য কিছুই নেই। সে ব্যক্তি
তা তিনবার পুনরাবৃত্তি করলেন। রাসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে (একটি
কথাই) বললেনঃ তার জন্য কিছুই নেই। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্
তা‘আলা তাঁর জন্য কৃত খাঁটি (একনিষ্ঠ)
আমল ব্যতীত, যা দ্বারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি
ছাড়া আর কিছুই উদ্দেশ্য না হয়, আর কিছুই কবুল করেন না।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৩১৪০
২। পিতামাতার প্রতি সদয় হওয়া
وَقَضٰی
رَبُّکَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاہُ وَبِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا ؕ
اِمَّا یَبۡلُغَنَّ عِنۡدَکَ الۡکِبَرَ اَحَدُہُمَاۤ اَوۡ کِلٰہُمَا فَلَا تَقُلۡ
لَّہُمَاۤ اُفٍّ وَّلَا تَنۡہَرۡہُمَا وَقُلۡ لَّہُمَا قَوۡلًا کَرِیۡمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার
কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ
কথা।
(সূরা বানী ইসরাইল ১৭:২৩)
عَنْ
أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَقُّ
الْوَالِدَيْنِ عَلَى وَلَدِهِمَا قَالَ " هُمَا جَنَّتُكَ وَنَارُكَ
" .
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! সন্তানের উপর মাতা-পিতার কী অধিকার আছে?
তিনি বলেনঃ তারা তোমার জান্নাত এবং তোমার জাহান্নাম।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৬৬২
৩। আত্মিয় স্বজন, অভাবগ্রস্থ ও মুসাফিরের হক আদায়
وَاٰتِ
ذَا الۡقُرۡبٰی حَقَّہٗ وَالۡمِسۡکِیۡنَ وَابۡنَ السَّبِیۡلِ وَلَا تُبَذِّرۡ
تَبۡذِیۡرًا
আত্নীয়-স্বজনকে তার হক দান কর এবং অভাবগ্রস্ত ও
মুসাফিরকেও। এবং কিছুতেই অপব্যয় করো না।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:২৬)
لاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ
أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ.
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্ক
বর্জন করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের
বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখা অবৈধ।
(আধুনিক প্রকাশনী-৫৬৩৭ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৩) সহিহ বুখারী, হাদিস
নং ৬০৭৪
৪। অপব্যয় করা হারাম
وَاٰتِ
ذَا الۡقُرۡبٰی حَقَّہٗ وَالۡمِسۡکِیۡنَ وَابۡنَ السَّبِیۡلِ وَلَا تُبَذِّرۡ
تَبۡذِیۡرًا اِنَّ
الۡمُبَذِّرِیۡنَ کَانُوۡۤا اِخۡوَانَ الشَّیٰطِیۡنِ ؕ وَکَانَ الشَّیۡطٰنُ
لِرَبِّہٖ کَفُوۡرًا
আত্নীয়-স্বজনকে তার হক দান কর এবং অভাবগ্রস্ত ও
মুসাফিরকেও। এবং কিছুতেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয়
পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:২৬-২৭)
عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ: {الْمُبَذِّرِينَ} [الإسراء: 27] ، قَالَ: الْمُبَذِّرِينَ فِي
غَيْرِ حَقٍّ
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ যারা অন্যায় পন্থায়
সম্পদ খরচ করে তারাই অপচয়কারী।
আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৪৪৭
৫। কৃপণতা ও অপব্যয় দু'টিই নিন্দনীয়
وَلَا
تَجۡعَلۡ یَدَکَ مَغۡلُوۡلَۃً اِلٰی عُنُقِکَ وَلَا تَبۡسُطۡہَا کُلَّ الۡبَسۡطِ
فَتَقۡعُدَ مَلُوۡمًا مَّحۡسُوۡرًا
তুমি একেবারে ব্যয়-কুষ্ঠ হয়োনা এবং একেবারে মুক্ত
হস্তও হয়ো না। তাহলে তুমি তিরস্কৃতি, নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:২৯)
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" مَا مِنْ يَوْمٍ يُصْبِحُ الْعِبَادُ فِيهِ إِلاَّ مَلَكَانِ يَنْزِلاَنِ
فَيَقُولُ أَحَدُهُمَا اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا، وَيَقُولُ الآخَرُ
اللَّهُمَّ أَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৪৪২
৬। দারিদ্রের ভয়ে সন্তান হত্যা করা হারাম
وَلَا
تَقۡتُلُوۡۤا اَوۡلَادَکُمۡ خَشۡیَۃَ اِمۡلَاقٍ ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُہُمۡ وَاِیَّاکُمۡ ؕ
اِنَّ قَتۡلَہُمۡ کَانَ خِطۡاً کَبِیۡرًا
দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো
না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মারাত্নক
অপরাধ।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩১)
وَمَا
مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ رِزۡقُہَا وَیَعۡلَمُ
مُسۡتَقَرَّہَا وَمُسۡتَوۡدَعَہَا ؕ کُلٌّ فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ
আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায়
থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে।
(সূরা হুদ ১১:৬)
بِاَیِّ
ذَنۡۢبٍ قُتِلَتۡ ۚ
কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল?
(সূরা তাকভির ৮১:৯)
৭। ব্যভিচারের সহায়ক সব কিছু নিষিদ্ধ
وَلَا
تَقۡرَبُوا الزِّنٰۤی اِنَّہٗ کَانَ فَاحِشَۃً ؕ وَسَآءَ سَبِیۡلًا
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল
কাজ এবং মন্দ পথ।
(সূরা বনি ইসরাইল ১৭:৩২)
وَذَرُوۡا
ظَاہِرَ الۡاِثۡمِ وَبَاطِنَہٗ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡسِبُوۡنَ الۡاِثۡمَ سَیُجۡزَوۡنَ
بِمَا کَانُوۡا یَقۡتَرِفُوۡنَ
তোমরা প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন গোনাহ পরিত্যাগ কর।
নিশ্চয় যারা গোনাহ করেছে, তারা অতিসত্বর তাদের
কৃতকর্মের শাস্তি পাবে।
(সূরা আনয়াম ৬:১২০)
اِنَّ
الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا
لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَالۡاٰخِرَۃِ ؕ وَاللّٰہُ یَعۡلَمُ
وَاَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ
যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন,
তোমরা জান না।
(সূরা নুর ২৪:১৯)
৮। অবৈধ হত্যাকাণ্ড নিষিদ্ধ
وَلَا
تَقۡتُلُوا النَّفۡسَ الَّتِیۡ حَرَّمَ اللّٰہُ اِلَّا بِالۡحَقِّ ؕ وَمَنۡ قُتِلَ
مَظۡلُوۡمًا فَقَدۡ جَعَلۡنَا لِوَلِیِّہٖ سُلۡطٰنًا فَلَا یُسۡرِفۡ فِّی
الۡقَتۡلِ ؕ اِنَّہٗ کَانَ مَنۡصُوۡرًا
সে প্রাণকে হত্যা করো না, যাকে আল্লাহ হারাম করেছেন; কিন্তু ন্যায়ভাবে।
যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয়, আমি তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষমতা
দান করি। অতএব, সে যেন হত্যার ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন না করে। নিশ্চয়
সে সাহায্যপ্রাপ্ত।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৩)
مِنۡ
اَجۡلِ ذٰلِکَ ۚۛؔ کَتَبۡنَا عَلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اَنَّہٗ مَنۡ قَتَلَ
نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَکَاَنَّمَا قَتَلَ
النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَمَنۡ اَحۡیَاہَا فَکَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ
وَلَقَدۡ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُنَا بِالۡبَیِّنٰتِ ۫ ثُمَّ اِنَّ کَثِیۡرًا
مِّنۡہُمۡ بَعۡدَ ذٰلِکَ فِی الۡاَرۡضِ لَمُسۡرِفُوۡنَ
এ কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া
কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে,
সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার পয়গম্বরগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী
নিয়ে এসেছেন। বস্তুতঃ এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে।
(সূরা মায়িদাহ ৫:৩২)
৯। এতীমের সম্পদ আত্মসাৎ না করা
وَلَا
تَقۡرَبُوۡا مَالَ الۡیَتِیۡمِ اِلَّا بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ حَتّٰی یَبۡلُغَ
اَشُدَّہٗ ۪ وَاَوۡفُوۡا بِالۡعَہۡدِ ۚ اِنَّ الۡعَہۡدَ کَانَ مَسۡـُٔوۡلًا
আর, এতিমের মালের কাছেও যেয়ো না, একমাত্র তার কল্যাণ আকাংখা
ছাড়া; সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যৌবনে পদার্পন করা পর্যন্ত এবং অঙ্গীকার
পূর্ন কর। নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৪)
وَیُطۡعِمُوۡنَ
الطَّعَامَ عَلٰی حُبِّہٖ مِسۡکِیۡنًا وَّیَتِیۡمًا وَّاَسِیۡرًا
তারা আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে।
(সূরা দাহর ৭৬:৮)
১০। ওয়াদা পূর্ণ করা
وَلَا
تَقۡرَبُوۡا مَالَ الۡیَتِیۡمِ اِلَّا بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ حَتّٰی یَبۡلُغَ
اَشُدَّہٗ ۪ وَاَوۡفُوۡا بِالۡعَہۡدِ ۚ اِنَّ الۡعَہۡدَ کَانَ مَسۡـُٔوۡلًا
আর, এতিমের মালের কাছেও যেয়ো না, একমাত্র তার কল্যাণ আকাংখা
ছাড়া; সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যৌবনে পদার্পন করা পর্যন্ত এবং অঙ্গীকার
পূর্ন কর। নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৪)
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
" آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ، إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ
خَانَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ "
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি।
১। কথা বললে মিথ্যা কথা বলে,
২। আমানত রাখলে খেয়ানত করে এবং
৩। প্রতিশ্রুতি দিলে ভঙ্গ করে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং
২৭৪৯)
১১। ওজনে কম দেয়া যাবে না
وَاَوۡفُوا
الۡکَیۡلَ اِذَا کِلۡتُمۡ وَزِنُوۡا بِالۡقِسۡطَاسِ الۡمُسۡتَقِیۡمِ ؕ ذٰلِکَ خَیۡرٌ
وَّاَحۡسَنُ تَاۡوِیۡلًا
মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দেবে এবং সঠিক দাঁড়িপালায়
ওজন করবে। এটা উত্তম; এর পরিণাম শুভ।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৫)
১২। অজানা বিষয়ে অনুসরণ না করা
وَلَا
تَقۡفُ مَا لَیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ اِنَّ السَّمۡعَ وَالۡبَصَرَ وَالۡفُؤَادَ
کُلُّ اُولٰٓئِکَ کَانَ عَنۡہُ مَسۡـُٔوۡلًا
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও
অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৬)
اَلۡیَوۡمَ
نَخۡتِمُ عَلٰۤی اَفۡوَاہِہِمۡ وَتُکَلِّمُنَاۤ اَیۡدِیۡہِمۡ وَتَشۡہَدُ
اَرۡجُلُہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ
আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব তাদের হাত
আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।
(সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৫)
১৩। অহংকার প্রদর্শন না করা
وَلَا
تَمۡشِ فِی الۡاَرۡضِ مَرَحًا ۚ اِنَّکَ لَنۡ تَخۡرِقَ الۡاَرۡضَ وَلَنۡ تَبۡلُغَ
الۡجِبَالَ طُوۡلًا
পৃথিবীতে দম্ভভরে পদচারণা করো না। নিশ্চয় তুমি
তো ভূ পৃষ্ঠকে কখনই বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে
পারবে না।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৭)
حَدَّثَنَا
أَحْمَدُ بْنُ يُوسُفَ الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ،
حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي
مُسْلِمٍ الأَغَرِّ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَأَبِي،
هُرَيْرَةَ قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْعِزُّ
إِزَارُهُ وَالْكِبْرِيَاءُ رِدَاؤُهُ فَمَنْ يُنَازِعُنِي عَذَّبْتُهُ "
.
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী ও আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তাঁরা উভয়ে
বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেছেনঃ ইয্যত ও সম্মান আল্লাহর ভূষণ এবং গর্ব ও অহংকার তাঁর চাদর। যে লোক এ ক্ষেত্রে
আমার সাথে টানা-হেঁচড়া করবে আমি তাকে অবশ্যই সাজা দিব। (ই.ফা. ৬৪৪১, ই.সে. ৬৪৯২)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৫৭৪
১৪। কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে না করা
ذٰلِکَ
مِمَّاۤ اَوۡحٰۤی اِلَیۡکَ رَبُّکَ مِنَ الۡحِکۡمَۃِ ؕ وَلَا تَجۡعَلۡ مَعَ
اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ فَتُلۡقٰی فِیۡ جَہَنَّمَ مَلُوۡمًا مَّدۡحُوۡرًا
এটা ঐ হিকমতের অন্তর্ভূক্ত, যা আপনার পালনকর্তা আপনাকে ওহী মারফত দান করেছেন। আল্লাহর সাথে
অন্য কোন উপাস্য স্থির করবেন না। তাহলে অভিযুক্ত ও আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বিতাড়িত অবস্থায়
জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবেন।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৯)
وَلَقَدۡ
اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ وَاِلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ لَئِنۡ اَشۡرَکۡتَ لَیَحۡبَطَنَّ
عَمَلُکَ وَلَتَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ
আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের পতি প্রত্যাদেশ
হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন,
তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন।
(সূরা আয যুমার ৩৯:৬৫)
মোট কথা
کُلُّ
ذٰلِکَ کَانَ سَیِّئُہٗ عِنۡدَ رَبِّکَ مَکۡرُوۡہًا
এ সবের মধ্যে যেগুলো মন্দকাজ, সেগুলো তোমার পালনকর্তার কাছে অপছন্দনীয়।
(সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৩৮)
No comments