কুরআন ও হাদিসের আলোকে মাতা পিতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তা’আলা আল্লাহর ইবাদতের পরেই পিতামাতার সাথে ভালো আচরণের বিষয়ে আদেশ করেছেন। পিতামাতা আমাদের পরম আপনজন। কুরআন ও হাদিসের আলোকে পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিষয়ে আলোচনা করা হল।
وَقَضٰی رَبُّکَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاہُ وَبِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا ؕ اِمَّا یَبۡلُغَنَّ عِنۡدَکَ الۡکِبَرَ اَحَدُہُمَاۤ اَوۡ کِلٰہُمَا فَلَا تَقُلۡ لَّہُمَاۤ اُفٍّ وَّلَا تَنۡہَرۡہُمَا وَقُلۡ لَّہُمَا قَوۡلًا کَرِیۡمًا وَاخۡفِضۡ لَہُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحۡمَۃِ وَقُلۡ رَّبِّ ارۡحَمۡہُمَا کَمَا رَبَّیٰنِیۡ صَغِیۡرًا ؕ
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে
সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে
উপনীত হয়;
তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে
শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে
শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।
(সুরা বানি ইসরাইল ১৭:২৩-২৪)
وَوَصَّیۡنَا الۡاِنۡسَانَ بِوَالِدَیۡہِ اِحۡسٰنًا ؕ حَمَلَتۡہُ اُمُّہٗ کُرۡہًا وَّوَضَعَتۡہُ کُرۡہًا ؕ وَحَمۡلُہٗ وَفِصٰلُہٗ ثَلٰثُوۡنَ شَہۡرًا ؕ حَتّٰۤی اِذَا بَلَغَ اَشُدَّہٗ وَبَلَغَ اَرۡبَعِیۡنَ سَنَۃً ۙ قَالَ رَبِّ اَوۡزِعۡنِیۡۤ اَنۡ اَشۡکُرَ نِعۡمَتَکَ الَّتِیۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ وَعَلٰی وَالِدَیَّ وَاَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰہُ وَاَصۡلِحۡ لِیۡ فِیۡ ذُرِّیَّتِیۡ ۚؕ اِنِّیۡ تُبۡتُ اِلَیۡکَ وَاِنِّیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ
আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের
আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব
করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন
শক্তি-সামর্থ্যের বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার
পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি
তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম। (সুরা আহক্বাফ ৪৬:১৫)
وَوَصَّیۡنَا الۡاِنۡسَانَ بِوَالِدَیۡہِ ۚ حَمَلَتۡہُ اُمُّہٗ وَہۡنًا عَلٰی وَہۡنٍ وَّفِصٰلُہٗ فِیۡ عَامَیۡنِ اَنِ اشۡکُرۡ لِیۡ وَلِوَالِدَیۡکَ ؕ اِلَیَّ الۡمَصِیۡرُ وَاِنۡ جَاہَدٰکَ عَلٰۤی اَنۡ تُشۡرِکَ بِیۡ مَا لَیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ ۙ فَلَا تُطِعۡہُمَا وَصَاحِبۡہُمَا فِی الدُّنۡیَا مَعۡرُوۡفًا ۫ وَّاتَّبِعۡ سَبِیۡلَ مَنۡ اَنَابَ اِلَیَّ ۚ ثُمَّ اِلَیَّ مَرۡجِعُکُمۡ فَاُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ
আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে
সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ
করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে
আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে।
পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে
শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান
তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং
দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই
দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে
তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।
(সুরা লুকমান ৩১:১৪-১৫)
عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَأْذَنَهُ فِي الْجِهَادِ فَقَالَ أَحَيٌّ وَالِدَاكَ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَفِيْهِمَا فَجَاهِدْ
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নবী
(সাঃ)-এর নিকট এসে জিহাদে যাবার অনুমতি প্রার্থনা করল। তখন তিনি বললেন, তোমার পিতামাতা জীবিত আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। নবী (সাঃ)
বললেন,
‘তবে তাঁদের খিদমাতের চেষ্টা কর।’
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩০০৪)
أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ أَقْبَلَ رَجُلٌ إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أُبَايِعُكَ عَلَى الْهِجْرَةِ وَالْجِهَادِ أَبْتَغِي الأَجْرَ مِنَ اللَّهِ . قَالَ " فَهَلْ مِنْ وَالِدَيْكَ أَحَدٌ حَىٌّ " . قَالَ نَعَمْ بَلْ كِلاَهُمَا . قَالَ " فَتَبْتَغِي الأَجْرَ مِنَ اللَّهِ " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ " فَارْجِعْ إِلَى وَالِدَيْكَ فَأَحْسِنْ صُحْبَتَهُمَا " .
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাঃ)- এর দরবারে দরবারে আগমন করলো। এরপর সে বলল, আমি আপনার নিকট হিজরত ও জিহাদের জন্য বাই’আত গ্রহণ করব। (এর দ্বারা) আমি আল্লাহর কাছে পুরস্কার ও
বিনিময় আশা করি। তিনি বললেন, তোমার
পিতা-মাতার মধ্যে কেউ জীবিত আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ, তারা দুজনেই জীবিত। তিনি আবার বললেন, সত্যিই কি! তুমি আল্লাহর নিকট প্রতিদান আকাঙ্খা করছ? সে বলল, হ্যাঁ! তিনি
বললেন,
তাহলে তুমি তোমার পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাদের দু’জনের সঙ্গে সদাচরণ কর। (ই.ফা.
৬২৭৬; ই.সে. ৬৩২৫) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৪০১
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ الْوَلِيدُ بْنُ الْعَيْزَارِ أَخْبَرَنِي قَالَ سَمِعْتُ أَبَا عَمْرٍو الشَّيْبَانِيَّ، يَقُولُ حَدَّثَنَا صَاحِبُ، هَذِهِ الدَّارِ وَأَشَارَ إِلَى دَارِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ قَالَ " الصَّلاَةُ عَلَى وَقْتِهَا ". قَالَ ثُمَّ أَىُّ قَالَ " ثُمَّ بِرُّ الْوَالِدَيْنِ ". قَالَ ثُمَّ أَىُّ قَالَ " الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ". قَالَ حَدَّثَنِي بِهِنَّ وَلَوِ اسْتَزَدْتُهُ لَزَادَنِي.
আবূ আমর শায়বানি (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি 'আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’উদ (রাঃ)-এর বাড়ির দিকে ইংগিত করে বলেন, এ বাড়ির মালিক আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহ্র নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথা সময়ে
সালাত আদায় করা। ইবনু মাস’উদ (রাঃ)
পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, অতঃপর কোনটি? আল্লাহ্র রসূল (সাঃ) বললেন, অতঃপর জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ (আল্লাহ্র পথে জিহাদ)। ইবনু মাস’উদ (রাঃ) বলেন, এগুলো তো আল্লাহ্র রসূল (সাঃ) আমাকে বলেছেনই, যদি আমি আরও অধিক জানতে চাইতাম, তাহলে তিনি আমাকে আরও বলতেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫২৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُمَارَةَ، بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَحَقُّ بِحُسْنِ الصُّحْبَةِ قَالَ
" أُمُّكَ ثُمَّ أُمُّكَ ثُمَّ أُمُّكَ ثُمَّ أَبُوكَ ثُمَّ أَدْنَاكَ أَدْنَاكَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল (সাঃ)! (মানুষের মধ্যে) সদ্ব্যবহার পাওয়ার সর্বাধিক অধিকারী
ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তোমার মা। তারপরও তোমার মা। তারপরও তোমার মা। তারপর তোমার
পিতা। অতঃপর তোমার নিকটবর্তী জন। এরপর তোমার নিকটবর্তী জন।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৩৯৫
(ই.ফা. ৬২৭০; ই.সে. ৬৩১৯)
یَسۡـَٔلُوۡنَکَ مَاذَا یُنۡفِقُوۡنَ ۬ؕ قُلۡ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ فَلِلۡوَالِدَیۡنِ وَالۡاَقۡرَبِیۡنَ وَالۡیَتٰمٰی وَالۡمَسٰکِیۡنِ وَابۡنِ
السَّبِیۡلِ ؕ وَمَا تَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ فَاِنَّ اللّٰہَ بِہٖ عَلِیۡمٌ
তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও-যে বস্তুই তোমরা ব্যয় কর, তা হবে পিতা-মাতার জন্যে, আত্নীয়-আপনজনের
জন্যে,
এতীম-অনাথদের জন্যে, অসহায়দের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে। আর তোমরা যে কোন সৎকাজ করবে, নিঃসন্দেহে তা অত্যন্ত ভালভাবেই আল্লাহর জানা রয়েছে।
(সূরা বাক্বারা ২:২১৫)
حَدَّثَنَا أَبُو
بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ،
حَدَّثَنَا عَلِيُّ
بْنُ مُسْهِرٍ،
عَنِ الشَّيْبَانِيِّ،
عَنِ الْوَلِيدِ
بْنِ الْعَيْزَارِ،
عَنْ سَعْدِ
بْنِ إِيَاسٍ
أَبِي عَمْرٍو
الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ
عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ مَسْعُودٍ،
قَالَ سَأَلْتُ
رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله
عليه وسلم
أَىُّ الْعَمَلِ
أَفْضَلُ قَالَ
"
الصَّلاَةُ لِوَقْتِهَا
"
.
قَالَ قُلْتُ
ثُمَّ أَىٌّ
قَالَ "
بِرُّ الْوَالِدَيْنِ
"
.
قَالَ قُلْتُ
ثُمَّ أَىٌّ
قَالَ "
الْجِهَادُ فِي
سَبِيلِ اللَّهِ
"
.
فَمَا تَرَكْتُ
أَسْتَزِيدُهُ إِلاَّ
إِرْعَاءً عَلَيْهِ
.
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, সর্বোত্তম ‘আমাল কোনটি? তিনি বললেন, সময় মত সলাত আদায় করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করা।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। তাঁর কষ্ট হবে এ ভেবে অতিরিক্ত থেকে বিরত থাকলাম।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৫৩
(ই.ফা. ১৫৪; ই.সে. ১৬০)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رِضَى الرَّبِّ تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي رِضَى الْوَالِدِ وَسَخَطُ الرَّبِّ فِي سَخَطِ الْوَالِدِ
আব্দুল্লাহ বিন আম্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে রয়েছে আল্লাহ তাবারাকা অতাআলার
সন্তুষ্টি, আর তাদের অসন্তুষ্টিতে রয়েছে তাঁর
অসন্তুষ্টি।” (তিরমিযী ১৮৯৯, হাকেম ৭২৪৯, বাযযার ২৩৯৪, ত্বাবারানী,
সিলসিলাহ সহীহাহ ৫১৬ নং)
হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৭২১
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ " . قِيلَ مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ নাক ধূলিমলিন হোক, আবারও নাক ধূলিমলিন হোক, আবারও নাক
ধূলিমলিন হোক। জিজ্ঞেস করা হল, কোন্ ব্যক্তির, হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা উভয়কে
অথবা একজনকে বার্ধক্যাবস্থায় পেল অথচ সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না। (ই.ফা. ৬২৭৯; ই.সে. ৬৩২৮)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৪০৪
حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ وَرَّادٍ، عَنِ الْمُغِيرَةِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ
" إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمْ عُقُوقَ الأُمَّهَاتِ، وَمَنْعَ وَهَاتِ، وَوَأْدَ الْبَنَاتِ، وَكَرِهَ لَكُمْ قِيلَ وَقَالَ، وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ، وَإِضَاعَةَ الْمَالِ ".
সা’দ ইবনু হাফ্স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মা-বাপের নাফরমানী করা, প্রাপকের
প্রাপ্য আটক রাখা, যে জিনিস গ্রহণ
করা তোমাদের জন্য ঠিক নয় তা তলব করা এবং কন্যা সন্তানকে জীবিত ক্ববর দেয়া। আর তিনি
তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন গল্প-গুজব করা, অতিরিক্ত প্রশ্ন করা ও সম্পদ অপচয় করা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৫৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৭)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৯৭৫
خْبَرَنِي عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ قَالَ:
أَنْبَأَنَا ابْنُ شُمَيْلٍ قَالَ:
أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ قَالَ:
حَدَّثَنَا فِرَاسٌ قَالَ:
سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:
" الْكَبَائِرُ: الْإِشْرَاكُ بِاللَّهِ، وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ، وَقَتْلُ النَّفْسِ، وَالْيَمِينُ الْغَمُوسُ
"
আবদুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কবীরা গুনাহ হলোঃ আল্লাহর সাথে
শরীক করা,
পিতামাতার নাফরমানী করা, অন্যায়ভাবে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৪০১১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مِنَ الْكَبَائِرِ شَتْمُ الرَّجُلِ وَالِدَيْهِ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ يَشْتِمُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ قَالَ " نَعَمْ يَسُبُّ أَبَا الرَّجُلِ فَيَسُبُّ أَبَاهُ وَيَسُبُّ أُمَّهُ فَيَسُبُّ أُمَّهُ " .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে
বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ পিতা-মাতাকে গালি দেয়া কাবীরাহ গুনাহ। সহাবা
কিরাম প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর
রসূল! কেউ কি তার পিতা-মাতাকে গালি দিতে পারে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। কোন ব্যক্তি অন্যের পিতাকে
গালি দেয় প্রত্যত্তরে সেও তার পিতাকে গালি দেয়। কেউ বা অন্যের মাকে গালি দেয় জবাবে
সেও তার মাকে গালি দেয়। (ই.ফা. ১৬৫; ই.সে. ১৭১)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৬৪
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ:
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيلِ قَالَ:
أَخْبَرَنِي أُسَيْدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا أُسَيْدٍ يُحَدِّثُ الْقَوْمَ قَالَ:
كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَجُلٌ:
يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلْ بَقِيَ مِنْ بِرِّ أَبَوَيَّ شَيْءٌ بَعْدَ مَوْتِهِمَا أَبَرُّهُمَا؟ قَالَ:
" نَعَمْ، خِصَالٌ أَرْبَعٌ:
الدُّعَاءُ لَهُمَا، وَالِاسْتِغْفَارُ لَهُمَا، وَإِنْفَاذُ عَهْدِهِمَا، وَإِكْرَامُ صَدِيقِهِمَا، وَصِلَةُ الرَّحِمِ الَّتِي لَا رَحِمَ لَكَ إِلَّا مِنْ قِبَلِهِمَا
"
আবু উসাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা নবী (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এক
ব্যক্তি বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার
পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার কোন অবকাশ আছে কি? তিনি বলেনঃ হাঁ, চারটি উপায় আছে। (১) তাদের জন্য দোয়া করা, (২) তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, (৩) তাদের প্রতিশ্রুতিসমূহ পূর্ণ করা এবং (৪) তাদের বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা
ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করা, যারা তাদের মাধ্যমে তোমার আত্মীয় (দারিমী, ইবনে মাজাহ, হাকিম, ইবনে হিব্বান)।
আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৩৫
No comments