শিরক কি? ও এর কুফল
শিরক কি? ও এর কুফল |
শিরক না করাই মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম
وَاِذۡ اَخَذَ رَبُّکَ مِنۡۢ بَنِیۡۤ اٰدَمَ مِنۡ ظُہُوۡرِہِمۡ ذُرِّیَّتَہُمۡ وَاَشۡہَدَہُمۡ عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ ۚ اَلَسۡتُ بِرَبِّکُمۡ ؕ قَالُوۡا بَلٰی ۚ شَہِدۡنَا ۚ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ اِنَّا کُنَّا عَنۡ ہٰذَا غٰفِلِیۡنَ ۙ
আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্টদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেন, আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই ? তারা বলল, অবশ্যই, আমরা অঙ্গীকার করছি। আবার না কেয়ামতের দিন বলতে শুরু কর যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। (সূরা আ'রাফ ৭:১৭২)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ كَمَا تَنَاتَجُ الإِبِلُ مِنْ بَهِيمَةٍ جَمْعَاءَ هَلْ تُحِسُّ مِنْ جَدْعَاءَ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَرَأَيْتَ مَنْ يَمُوتُ وَهُوَ صَغِيرٌ قَالَ " اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ "
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি সন্তানই ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতামাতা তাদেরকে ইয়াহুদী বা খৃস্টান বানায়। যেভাবে উট পূর্ণাঙ্গ পশুই জন্ম দেয়, তাতে তোমরা কোন কান কাটা দেখো কি? সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! অপ্রাপ্ত বয়সে মারা যায় এমন শিশু সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি বলেন, আল্লাহই ভালো জানেন, তারা কিরূপ আমল করতো।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৭১৪)
وَاِذَا مَسَّ النَّاسَ ضُرٌّ دَعَوۡا رَبَّہُمۡ مُّنِیۡبِیۡنَ اِلَیۡہِ ثُمَّ اِذَاۤ اَذَاقَہُمۡ مِّنۡہُ رَحۡمَۃً اِذَا فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ بِرَبِّہِمۡ یُشۡرِکُوۡنَ ۙ
মানুষকে যখন দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করে, তখন তারা তাদের পালনকর্তাকে আহবান করে তাঁরই অভিমুখী হয়ে। অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে রহমতের স্বাদ আস্বাদন করান, তখন তাদের একদল তাদের পালনকর্তার সাথে শিরক করতে থাকে, (সূরা রুম ৩০:৩৩)
শিরকের সূচনা
ক) ক্বাওমে নূহ
وَقَالُوۡا لَا تَذَرُنَّ اٰلِہَتَکُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَّلَا سُوَاعًا ۬ وَّلَا یَغُوۡثَ وَیَعُوۡقَ وَنَسۡرًا ۚ
তারা বলছেঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ করো না এবং ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে। (সূরা নূহ ৭১:২৩)
খ) বনি ইসরাইল
قَالَ فَاِنَّا قَدۡ فَتَنَّا قَوۡمَکَ مِنۡۢ بَعۡدِکَ وَاَضَلَّہُمُ السَّامِرِیُّ
বললেনঃ আমি তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছি তোমার পর এবং সামেরী তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে। (সূরা তোহা ২০:৮৫)
فَرَجَعَ مُوۡسٰۤی اِلٰی قَوۡمِہٖ غَضۡبَانَ اَسِفًا ۬ قَالَ یٰقَوۡمِ اَلَمۡ یَعِدۡکُمۡ رَبُّکُمۡ وَعۡدًا حَسَنًا ۬ اَفَطَالَ عَلَیۡکُمُ الۡعَہۡدُ اَمۡ اَرَدۡتُّمۡ اَنۡ یَّحِلَّ عَلَیۡکُمۡ غَضَبٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ فَاَخۡلَفۡتُمۡ مَّوۡعِدِیۡ
অতঃপর মূসা তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে গেলেন ক্রদ্ধ ও অনুতপ্ত অবস্থায়। তিনি বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমাদের পালনকর্তা কি তোমাদেরকে একটি উত্তম প্রতিশ্রুতি দেননি? তবে কি প্রতিশ্রুতির সময়কাল তোমাদের কাছে দীর্ঘ হয়েছে, না তোমরা চেয়েছ যে, তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার ক্রোধ নেমে আসুক, যে কারণে তোমরা আমার সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করলে? (সূরা তোহা ২০:৮৬)
قَالُوۡا مَاۤ اَخۡلَفۡنَا مَوۡعِدَکَ بِمَلۡکِنَا وَلٰکِنَّا حُمِّلۡنَاۤ اَوۡزَارًا مِّنۡ زِیۡنَۃِ الۡقَوۡمِ فَقَذَفۡنٰہَا فَکَذٰلِکَ اَلۡقَی السَّامِرِیُّ ۙ
তারা বললঃ আমরা তোমার সাথে কৃত ওয়াদা স্বেচ্ছায় ভঙ্গ করিনি; কিন্তু আমাদের উপর ফেরউনীদের অলংকারের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। অতঃপর আমরা তা নিক্ষেপ করে দিয়েছি। এমনি ভাবে সামেরীও নিক্ষেপ করেছে। (সূরা তোহা ২০:৮৭)
فَاَخۡرَجَ لَہُمۡ عِجۡلًا جَسَدًا لَّہٗ خُوَارٌ فَقَالُوۡا ہٰذَاۤ اِلٰـہُکُمۡ وَاِلٰہُ مُوۡسٰی ۬ فَنَسِیَ ؕ
অতঃপর সে তাদের জন্য তৈরী করে বের করল একটি গো-বৎস, একটা দেহ, যার মধ্যে গরুর শব্দ ছিল। তারা বললঃ এটা তোমাদের উপাস্য এবং মূসার ও উপাস্য, অতঃপর মূসা ভুলে গেছে। (সূরা তোহা ২০:৮৮)
اَفَلَا یَرَوۡنَ اَلَّا یَرۡجِعُ اِلَیۡہِمۡ قَوۡلًا ۬ۙ وَّلَا یَمۡلِکُ لَہُمۡ ضَرًّا وَّلَا نَفۡعًا
তারা কি দেখে না যে, এটা তাদের কোন কথার উত্তর দেয় না এবং তারে কোন ক্ষতি ও উপকার করার ক্ষমতাও রাখে না? (সূরা তোহা ২০:৮৯)
শিরক করার কারণ
শিরক করার অনেক কারণ রয়েছে, উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কারণ হলো
ক) আল্লাহ সম্পর্কে সঠিক ধারনার অভাব
খ) অতিরিক্ত ভক্তি ও আবেগ
গ) ওয়াসিলার ভুল ব্যাখ্যা
ঘ) পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ
ঙ) সাফায়াতের ভুল ব্যাখ্যা
চ) অজ্ঞতা
শিরকের প্রকারভেদ
শিরক প্রধানত চার প্রকার
ক) আশ শিরকু ফিযযাত: আল্লাহর সাথে শিরক।
খ) আশ শিরকু ফিররুবূবিয়্যাহ: আল্লাহর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতায় অন্য কাউকে অংশীদার বলে বিশ্বাস করা। আল্লাহর কাজে অন্যকে শরিক করা।
গ) আশ শিরকু ফিল উলুহিয়্যাহ: ইবাদতে আল্লাহর সাথে অন্যকে শরিক করার নাম হচ্ছে আশ শিরকু ফিল উলুহিয়্যাহ। এটাকে শিরক ফিল উবুদিয়্যাহ বা শিরক ফিল ইবাদত ও বলা হয়।
ঘ) আশ শিরকু ফিল আসমা ওয়াস সিফাত: আল্লাহর সত্তাগত নাম ও গুণবাচক নামের সাথে শিরক করা।
শিরকের কুফলসমূহ
ক) বড় জুলুম
وَاِذۡ قَالَ لُقۡمٰنُ لِابۡنِہٖ وَہُوَ یَعِظُہٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشۡرِکۡ بِاللّٰہِ ؕؔ اِنَّ الشِّرۡکَ لَظُلۡمٌ عَظِیۡمٌ
যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বললঃ হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়। (সূরা লোকমান ৩১:১৩)
খ) ক্ষমার অযোগ্য গুনাহ
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِہٖ وَیَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَمَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیۡدًا
নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। (সূরা নিসা ৪:১১৬)
গ) যাবতীয় নেক আমল কে ধ্বংস করে দেয়
وَلَقَدۡ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ وَاِلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ لَئِنۡ اَشۡرَکۡتَ لَیَحۡبَطَنَّ عَمَلُکَ وَلَتَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ
আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের পতি প্রত্যাদেশ হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন। (সূরা যুমার ৩৯:৬৫)
ঘ) জান্নাত হারাম করে দেয়
اِنَّہٗ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدۡ حَرَّمَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ الۡجَنَّۃَ وَمَاۡوٰىہُ النَّارُ ؕ وَمَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ
নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা মায়েদা ৫:৭২)
ঙ) শিরক ক্ষমা করা হবে না
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِہٖ وَیَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَمَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدِ افۡتَرٰۤی اِثۡمًا عَظِیۡمًا
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল। (সূরা নিসা ৪:৪৮)
চ) বড় কবিরা গুনাহ
قَالَ عَبْدُ اللهِ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الذَّنْبِ أَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ قَالَ أَنْ تَدْعُوَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ قَالَ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ خَشْيَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ قَالَ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ ثُمَّ أَنْ تُزَانِيَ بِحَلِيلَةِ جَارِكَ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقَهَا{وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا} الْآيَةَ.
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক লোক বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ্ কোন্টি? তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ্র সঙ্গে কাউকে সমকক্ষ গণ্য কর অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। লোকটি বলল, তারপর কোন্টি? তিনি বললেনঃ তারপর হলো, তুমি তোমার সন্তানকে এ ভয়ে হত্যা কর যে, সে তোমার সঙ্গে খাদ্য খাবে। লোকটি বলল, তারপর কোন্টি? তিনি বললেনঃ তারপর হলো, তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে যিনা কর। অত:পর আল্লাহ এ কথার সত্যতায় অবতীর্ণ করলেনঃ “এবং তারা আল্লাহ্র সঙ্গে কোন ইলাহকে আহ্বান করে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন উপযুক্ত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যাভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে” (সূরা ফুরক্বান ২৫/৬৮)। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৬) সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৮৬১
ছ) শিরক হল অপবিত্রতা
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡمُشۡرِکُوۡنَ نَجَسٌ فَلَا یَقۡرَبُوا الۡمَسۡجِدَ الۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِہِمۡ ہٰذَا ۚ وَاِنۡ خِفۡتُمۡ عَیۡلَۃً فَسَوۡفَ یُغۡنِیۡکُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖۤ اِنۡ شَآءَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ
হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। আর যদি তোমরা দারিদ্রের আশংকা কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরা তাওবা ৯:২৮)
জ) শিরক ধ্বংস ও বিপর্যয়ের কারণ
حُنَفَآءَ لِلّٰہِ غَیۡرَ مُشۡرِکِیۡنَ بِہٖ ؕ وَمَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَکَاَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَآءِ فَتَخۡطَفُہُ الطَّیۡرُ اَوۡ تَہۡوِیۡ بِہِ الرِّیۡحُ فِیۡ مَکَانٍ سَحِیۡقٍ
আল্লাহর দিকে একনিষ্ট হয়ে, তাঁর সাথে শরীক না করে; এবং যে কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করল; সে যেন আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল, অতঃপর মৃতভোজী পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোন দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল। (সূরা হাজ্জ ২২:৩১)
ঝ) শিরক এক চরম ব্যর্থতা
وَیَوۡمَ یَقُوۡلُ نَادُوۡا شُرَکَآءِیَ الَّذِیۡنَ زَعَمۡتُمۡ فَدَعَوۡہُمۡ فَلَمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَہُمۡ وَجَعَلۡنَا بَیۡنَہُمۡ مَّوۡبِقًا
যেদিন তিনি বলবেনঃ তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে তাদেরকে ডাক। তারা তখন তাদেরকে ডাকবে, কিন্তু তারা এ আহবানে সাড়া দেবে না। আমি তাদের মধ্যস্থলে রেখে দেব একটি মৃত্যু গহবর। (সূরা কাহাফ ১৮:৫২)
ঞ) মুশরিকদের জন্য ক্ষমা চাওয়া যাবে না
مَا کَانَ لِلنَّبِیِّ وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡ یَّسۡتَغۡفِرُوۡا لِلۡمُشۡرِکِیۡنَ وَلَوۡ کَانُوۡۤا اُولِیۡ قُرۡبٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَہُمۡ اَنَّہُمۡ اَصۡحٰبُ الۡجَحِیۡمِ
নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করে, যদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী। (সূরা তাওবা ৯:১১৩)
ট) শিরক দাঁড়া আল্লাহর হক নষ্ট হয়
عَنْ مُعَاذٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنْتُ رِدْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى حِمَارٍ يُقَالُ لَهُ عُفَيْرٌ، فَقَالَ " يَا مُعَاذُ، هَلْ تَدْرِي حَقَّ اللَّهِ عَلَى عِبَادِهِ وَمَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ ". قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ " فَإِنَّ حَقَّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوهُ وَلاَ يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا، وَحَقَّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ أَنْ لاَ يُعَذِّبَ مَنْ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا ". فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَفَلاَ أُبَشِّرُ بِهِ النَّاسَ قَالَ " لاَ تُبَشِّرْهُمْ فَيَتَّكِلُوا ".
মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, উফাইর নামক একটি গাধার পিঠে আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পেছনে আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, হে মু’আয, তুমি কি জান বান্দার উপর আল্লাহ্র হক কী? এবং আল্লাহ্র উপর বান্দার হক কী? আমি বললাম, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, বান্দার উপর আল্লাহ্র হক হলো, বান্দা তাঁর ‘ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। আর আল্লাহ্র উপর বান্দার হক হলো, তাঁর ‘ইবাদাতে কাউকে শরীক না করলে আল্লাহ্ তাকে শাস্তি দিবেন না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি কি লোকদের এ সুসংবাদ দিব না? তিনি বললেন, তুমি তাদের সুসংবাদটি দিও না, তাহলে লোকেরা এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৮৫৬)
উপসংহার
শিরক মিশ্রিত ঈমান মানুষের আমলসমূহ ধ্বংস করে দেয়। আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা'য়ালা বলেন
لَاۤ اِکۡرَاہَ فِی الدِّیۡنِ ۟ۙ قَدۡ تَّبَیَّنَ الرُّشۡدُ مِنَ الۡغَیِّ ۚ فَمَنۡ یَّکۡفُرۡ بِالطَّاغُوۡتِ وَیُؤۡمِنۡۢ بِاللّٰہِ فَقَدِ اسۡتَمۡسَکَ بِالۡعُرۡوَۃِ الۡوُثۡقٰی ٭ لَا انۡفِصَامَ لَہَا ؕ وَاللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ
দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন। (সূরা বাকারা ২:২৫৬)
No comments