কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে সুন্নতের গুরুত্ব ও ফজিলত । জুমুয়ার খুতবা
সুন্নতের গুরুত্ব ও ফজিলত |
الحمد لله رب العالمين،والعاقبهللمتقين،والصلاهوالسلامعلىسيدالانبياءوالمرسلينوعلىالهواصحابهاجمعين،اشهدانلاالهالااللهواشهدانمحمداعبدهورسوله
সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আর আল্লাহ ভীরুদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম। দুরুদ ও সালাম প্রিয় নবী (সাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ ও সমস্ত সাহাবা কেরামের প্রতি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
ايها الحاضرون الكرام، موضوع الخطبه في هذه اليوم "أهميةالسنة النبوية"
সম্মানিত উপস্থিতি! আজকে আমাদের খুতবার আলোচ্য বিষয় "সুন্নাতে রাসূল সা: এর গুরুত্ব।"
রাসূলের (সাঃ) আনুগত্যইহেদায়াত
قُلۡ اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَاَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ ۚ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّمَا عَلَیۡہِ مَا حُمِّلَ وَعَلَیۡکُمۡ مَّا حُمِّلۡتُمۡ ؕ وَاِنۡ تُطِیۡعُوۡہُ تَہۡتَدُوۡا ؕ وَمَا عَلَی الرَّسُوۡلِ اِلَّا الۡبَلٰغُ الۡمُبِیۡنُ
বলুনঃ আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তার উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে সে দায়ী এবং তোমাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে তোমরা দায়ী। তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবে। রসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টরূপে পৌছে দেয়া।
(সূরা আন নূর - ২৪:৫৪)
রাসুলের(সাঃ) আদেশঅলঙ্ঘনীয়
وَمَاۤ اٰتٰىکُمُ الرَّسُوۡلُ فَخُذُوۡہُ ٭ وَمَا نَہٰىکُمۡ عَنۡہُ فَانۡتَہُوۡا ۚ وَاتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ۘ
রাসূল (সাঃ) তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
(সূরা আল হাশ্র - ৫৯:৭)
রাসুল(সাঃ) ঈমানেরপ্রতিআহবানেরদায়িত্বপ্রাপ্ত
اِنَّاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ شَاہِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِیۡرًا ۙلِّتُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَرَسُوۡلِہٖ وَتُعَزِّرُوۡہُ وَتُوَقِّرُوۡہُ ؕ وَتُسَبِّحُوۡہُ بُکۡرَۃً وَّاَصِیۡلًا
আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি অবস্থা ব্যক্তকারীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে। যাতে তোমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা কর।
(আল ফাত্হ - ৪৮:৮-৯)
আল্লাহর অনুগ্রহ পেতে রাসুলের(সাঃ) আনুগত্য
وَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَاَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ
নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও।
(আন নূর - ২৪:৫৬)
রাসূলের(সাঃ) বাণীও ওহী
مَا ضَلَّ صَاحِبُکُمۡ وَمَا غَوٰی ۚ وَمَا یَنۡطِقُ عَنِ الۡہَوٰی ؕ اِنۡ ہُوَ اِلَّا وَحۡیٌ یُّوۡحٰی ۙ
তোমাদের সংগী পথভ্রষ্ট হননি এবং বিপথগামীও হননি। এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না। কোরআন ওহী, যা প্রত্যাদেশ হয়।
(সূরা আন-নাজম - ৫৩:২-৪)
রাসুলের(সাঃ) বাণীও ওহীরঅন্তর্ভুক্ত
وَلَوۡ تَقَوَّلَ عَلَیۡنَا بَعۡضَ الۡاَقَاوِیۡلِ ۙ لَاَخَذۡنَا مِنۡہُ بِالۡیَمِیۡنِ ۙ لَاَخَذۡنَا مِنۡہُ بِالۡیَمِیۡنِ ۙ ثُمَّ لَقَطَعۡنَا مِنۡہُ الۡوَتِیۡنَ ۫ۖ فَمَا مِنۡکُمۡ مِّنۡ اَحَدٍ عَنۡہُ حٰجِزِیۡنَ
সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।
(আল হাক্কাহ - ৬৯:৪৪-৪৭)
اِنَّمَا کَانَ قَوۡلَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذَا دُعُوۡۤا اِلَی اللّٰہِ وَرَسُوۡلِہٖ لِیَحۡکُمَ بَیۡنَہُمۡ اَنۡ یَّقُوۡلُوۡا سَمِعۡنَا وَاَطَعۡنَا ؕ وَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ
মুমিনদের বক্তব্য কেবল এ কথাই যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে তাদেরকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলেঃ আমরা শুনলাম ও আদেশ মান্য করলাম। তারাই সফলকাম।
(সূরা আন নূর - ২৪:৫১)
ইসলামিশরীয়তেরদ্বিতীয়ভিত্তি
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ وَلَا تَوَلَّوۡا عَنۡہُ وَاَنۡتُمۡ تَسۡمَعُوۡنَ ۚوَلَا تَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَہُمۡ لَا یَسۡمَعُوۡنَ
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য কর এবং শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না। আর তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা বলে যে,আমরা শুনেছি,অথচ তারা শোনেনা।
(সূরা আল আনফাল ৮:২০-২১)
تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ رَسُوْلِه. رَوَاهُ فى المُوَطَّا
রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না- আল্লাহ্র কিতাব ও তাঁর রসূলের হাদীস।
(ইমাম মালিক মুওয়াত্তায় বর্ণনা করেছেন)। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ১৮৬)
রাসুলের(সাঃ) অনুসরণমানেইআল্লাহরপ্রতিভালোবাসাপ্রদর্শন
قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰہَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰہُ وَیَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَاللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ
বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।
(আল ইমরান - ৩:৩১)
بارك الله لنا ولكم في القران الكريم ونفعنا واياكم بما فيه من الايات والذكر الحكيم
মহান আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল কুরআনের মাধ্যমে আমাকে ও আপনাদেরকে বরকত দান করুন এবং তাঁর আয়াতসমূহ ও শিক্ষণীয় বাণী দ্বারা উপকৃত করুন।
রাসুল(সাঃ) কে প্রেরণেরউদ্দেশ্য
وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا لِیُطَاعَ بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ
বস্তুতঃ আমি একমাত্র এই উদ্দেশ্যেই রসূল প্রেরণ করেছি, যাতে আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী তাঁদের আদেশ-নিষেধ মান্য করা হয়।
(সূরা আন নিসা - ৪:৬৪)
রাসুলের(সাঃ) আনুগত্যমানেআল্লাহরআনুগত্য
مَنۡ یُّطِعِ الرَّسُوۡلَ فَقَدۡ اَطَاعَ اللّٰہَ ۚ وَمَنۡ تَوَلّٰی فَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ عَلَیۡہِمۡ حَفِیۡظًا ؕ
যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ), তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি।
(সূরা আন নিসা - ৪:৮০)
হালাল হারাম নির্ণয়ের দায়িত্ব আল্লাহর। তবেতিনিরাসুলকেও (সাঃ) সে অধিকারদানকরেছেন
اَلَّذِیۡنَ یَتَّبِعُوۡنَ الرَّسُوۡلَ النَّبِیَّ الۡاُمِّیَّ الَّذِیۡ یَجِدُوۡنَہٗ مَکۡتُوۡبًا عِنۡدَہُمۡ فِی التَّوۡرٰىۃِ وَالۡاِنۡجِیۡلِ ۫ یَاۡمُرُہُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَیَنۡہٰہُمۡ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَیُحِلُّ لَہُمُ الطَّیِّبٰتِ وَیُحَرِّمُ عَلَیۡہِمُ الۡخَبٰٓئِثَ وَیَضَعُ عَنۡہُمۡ اِصۡرَہُمۡ وَالۡاَغۡلٰلَ الَّتِیۡ کَانَتۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِہٖ وَعَزَّرُوۡہُ وَنَصَرُوۡہُ وَاتَّبَعُوا النُّوۡرَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ مَعَہٗۤ ۙ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ
সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।
(আল আরাফ - ৭:১৫৭)
لَقَدۡ مَنَّ اللّٰہُ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ بَعَثَ فِیۡہِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡ اَنۡفُسِہِمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِہٖ وَیُزَکِّیۡہِمۡ وَیُعَلِّمُہُمُ الۡکِتٰبَ وَالۡحِکۡمَۃَ ۚ وَاِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ
আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুতঃ তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট।
(আল ইমরান-৩:১৬৪)
রাসুল(সাঃ) হিকমতশিক্ষাদানেদায়িত্বপ্রাপ্তছিলেন
فَلَا وَرَبِّکَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ حَتّٰی یُحَکِّمُوۡکَ فِیۡمَا شَجَرَ بَیۡنَہُمۡ ثُمَّ لَا یَجِدُوۡا فِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ حَرَجًا مِّمَّا قَضَیۡتَ وَیُسَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا
অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।
(সূরা আন নিসা - ৪:৬৫)
ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন
আরো পড়ুন | সুন্নত ও আধুনিক বিজ্ঞান
No comments