নিরাপত্তার চাদরঃ আয়াতুল কুরসী
আয়াতুল কুরসি |
পবিত্র এ আয়াতটি পরকালীন সফলতার বাতিঘর। হজরত উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত নবী করিম (সা.) বলেন, ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠকারী মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পাবে জান্নাত- (সুনানে নাসায়ি : ৯৯১৮)।
পাশাপাশি এতে আছে পার্থিব নিরাপত্তা। সহিহ বুখারির ঘটনা, একবার কিছু ফিতরার খাদ্যসামগ্রী নবী (সা.)-এর হাতে এলো। তিনি এগুলোর পাহারায় নিযুক্ত করলেন আবু হুরায়রা (রা.)কে। সজাগ দৃষ্টিতে পাহারা দিচ্ছেলেন তিনি। সময়ের পরিবর্তনে দিন শেষে রাত এলো।
আবু হুরায়রা (রা.) দেখলেন ফিতরার খাদ্যসামগ্রী থেকে এক লোক চুরি করছে। তিনি দৌড়ে তাকে ধরলেন। বললেন, ‘অসহায়ের খাবারে হাত দেয়ার সাহস কোথায় পেলে? দাঁড়াও। সকাল হোক। তোমাকে নবীজির বিচারের মুখোমুখি করব।’ চোর তো ভয়ে কাতর। বলল, ‘আমি খু-উ-ব অসহায়। স্ত্রী-সন্তানের মুখে দেয়ার মতো কিছুই নেই। অভাবে পড়ে ভুল করেছি। ক্ষমা চাই। ওয়াদা করছি, আর কখনও চুরি করব না।’ চোরের কথায় তার মনে দয়া হল। ছেড়ে দিলেন তাকে।
রাত শেষে সকাল এলো। নবী (সা.) বললেন, ‘আবু হুরায়রা! তোমার বন্দির খবর কী? তিনি নবীজিকে বিস্তারিত বললেন। নবীজি বললেন, ‘সে আবার আসবে।’ ঠিকই চোর পরের রাতে এলো। দয়ালু আবু হুরায়রা তাকে আবারও ছেড়ে দিলেন। সকালে নবীজি (সা.) তার থেকে রাতের গল্প শুনে বললেন, সাবধান থেক আবু হুরায়রা! সে আবার আসবে।’
প্রিয় নবীর কথা তো মিথ্যা হওয়ার নয়। সে আবার এলো। আবু হুরায়রা (রা.) এবার কঠোর। বললেন, ‘তুমি ধোঁকাবাজ, মিথ্যুক। দুইবার ওয়াদা ভেঙেছ। তোমাকে আর ছাড়ছি না।’ অবস্থা বেগতিক দেখে চোর বলল, ‘আমাকে ছেড়ে দিলে তোমাকে কল্যাণকর কিছু শেখাব।’
তিনি বললেন, ‘তা কী?’ চোর বলল, ‘প্রতিদিন আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমিও। সকাল পর্যন্ত তোমার নিরাপত্তায় আল্লাহ পাক ফেরেশতা নিযুক্ত করে দেবেন। রাত কাটাবে প্রভুর নিরাপত্তার চাদরে।’ আবু হুরায়রা (রা.) অনন্য এ জ্ঞানের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দিলেন।
সকাল হল। নবী (সা.) বন্দি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি রাতের পুরো ঘটনা শোনালেন। সব শুনে নবীজি বললেন, তুমি জান সে কে? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তখন নবী (সা.) বললেন, সে ইবলিশ। সে মিথ্যুক হলেও তোমাকে যা বলেছে তা পুরোপুরি সত্য। -সহিহ বুখারি : ২৩১১
আল্লাহতায়ালা মহাগ্রন্থের পবিত্র এ আয়াত থেকে আমাদের উপকৃত হওয়ার তাওফিক দিক। আমিন।
No comments